অস্ত্রোচারের মাধ্যমে প্রায় দেড় মাস আগে আলাদা জীবন পাওয়া শিশু তোফা ও তহুরা সুস্থ্ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে।
অস্ত্রোপচারের ক্ষত পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ায় রোববার হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনুর ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইনফেকশনের ঝুঁকি আর নাই, নেই কোনো ধরনের শঙ্কাও।
“দুই শিশুর বাবা-মা বাড়িতে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব। তাছাড়া দুই শিশু বেশ ভালো আছে।”
রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তোফা ও তহুরাকে হাসপাতালের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।ছয় মাস পর তাদের পায়ূপথ তৈরি করার জন্য আরেকটি অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানান চিকিৎসক শাহনুর।
তিনি বলেন, “দুই বাচ্চার জন্য কিছু কেনাকাটা করছি। আর সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম উপস্থিত থাকবেন।”
গত পহেলা অগাস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে দুই বোনকে আলাদা করেন চিকিৎসকরা।অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের পাশের একটি কক্ষে প্রায় ২০ দিন রাখা হয় তোফা ও তহুরাকে।
সে সময় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তাদের সম্পূর্ণ আলাদা কক্ষে রাখা হয়। তারপর তৃতীয় তলার একটি কেবিনে রাখা হয় তোফা ও তহুরাকে।
দুই শিশুর মা সাহিদা বেগম বলেন, “আমার দুই শিশুই অনেক ভাল আছে। দুজনই সমানভাবে চঞ্চল। খুব সামান্য ক্ষত আছে। তাতে কোনো সমস্যা নেই বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।”কোরবানির ঈদ বাড়ি করার ইচ্ছা থাকলেও বন্যার কারণে যেতে পারেননি জানিয়ে শিশু দুইটির বাবা
মো. রাজু মিয়া বলেন, “বাড়িতে যেতে চায়, মন টানে অনেক।”
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবনের কৃষক রাজু মিয়ার এই জমজ শিশু জোড়া লাগানো অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়েছিল গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর।
তোফা আর তহুরার পিঠের দিক থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত মেরুদণ্ডের হাড় সংযুক্ত ছিল। মাথা-হাত-পা আলাদা হলেও তাদের মলদ্বার ছিল একটি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এমন ঘটনাকে বলা হয় ‘পাইগোপেগাস’।