জয়নগর (কলারোয়া) প্রতিনিধি: জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে। অথচ জয়নগরের সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারী জামাতের নেতাকর্মীরা রয়েছে জামাই আদরে। বিগত ২০১৩ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল জামাতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুদন্ডাদেশ দেওয়ায় ব্যাপক তা-ব চালায় জামাতের মহিলা কর্মীসহ সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।
কলারোয়া থানার মধ্যে জয়নগর ইউনিয়নের মানিকনগর, গাজনা, ক্ষেত্রপাড়া ও বসন্তপুর গ্রামের জামাতের নেতাকমৃীদের সাংগঠনিক অবস্থা বেশ শক্ত। জামাতের নেতাকর্মীরা সে সময় মাত্রাতিরিক্ত ওই জনপদে তান্ডব চালায়। সাতক্ষীরা-সরসকাটি সড়কের কমপক্ষে ৫ জায়গা, কলারোয়া-সরসকাটি সড়কের ৪জায়গায় কেটে ও সড়কে ধারে বিভিন্ন বাজার এলাকায় রাস্তার উপর কাঠের গুড়ি ফেলে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখে প্রায় ৯ মাস। তারা ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট কলারোয়া থানার সরসকাটি বাজারে সকালের দিকে প্রায় ৫শতাধিক নেতাকর্মী জড়ো হয়। এরপর ৮/১০টি ককটেল ও বোমা ফাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। ওই দিন সকাল ১১টার দিকে শিবির নেতা বুলবুলের নেতৃত্বে সরসকাটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তৎকালিন আইসি এসআই লিয়াকতের গলায় রাম দা ধরে এবং সব পুলিশকে জিম্মী করে জামাতের জয়নগর ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আলতাফকে ক্যাম্পের লকআপ থেকে জোর করে বের করে নিয়ে এসে বাজারে বিজয় উল্লাস করে মিছিল করে। ওই দিন দুপুরের দিকে সরসকাটি বাজারে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব মাষ্টারকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ২০ আগস্ট দুপুরে দৈনিক পত্রদূত ও সংবাদ’র সাংবাদিক আব্দুর রহমানের উপর ককটেল হামালা চালায় এবং তাকে ও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। মৃত ভেবে তাকে তারা ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে তার পাঁচটি মাছের ঘেরের মাছ লুট করে জামাত-শিবির নেতা-কর্মীরা। এমনিভাবে পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগ নেতা সালমান সরকার, রোউল বিশ্বাস, আমির হোসেন, শফিকুর রহমান মালীসহ অনেক আওযামী লীগ নেতাকর্মীদের জখম করে। জ্বালিয়ে দেয় অনেক নেতার ঘরবাড়ি। লুট করে দোকানপাটসহ ঘরবাড়ির মালামাল। জামাত-শিবির ও বিএনপির হায়েনারা ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে জয়নগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান জজ আলিকে তার সরসকাটি বাজারস্থ বাসা থেকে ধরে নিয়ে ক্ষেত্রপাড়া খালের ধারে জবাই করে হত্যা করে। ২০১৩ সালে সরকার উৎখাত আনোদলনে যে সব জামাতের লোকজন রাস্তা কাটা, গাছ কাটা, পুলিশের কাজে বাঁধ দেওয়া, ঘরবাড়ি জ¦ালিয়ে দেওয়া, দোকান পাট ও বসত বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করা, খুন করাসহ যারা আওয়ামী রাজনীতি নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিলো এবং ওই সব লোমহর্ষক ঘটনায় যারা জড়িত ছিলো তারা অনেকেই বাড়ি ছাড়া থাকলেও তাদের মধ্যে জয়নগর ইউনিয়ন জামাতের সাবেক আমির গাজনা গ্রামের মৃত রজব আলি সরদারের ছেলে আফছার হুজুর এলাকায় আছে বহাল তবিয়তে। তার ছেলে মাওলানা আসাদুজ্জামান ফারুকী কলারোয়া থানা জামে মসজিদের ইমাম। ওই ইমাম ছেলের বদৌলতে সে হয়েছে নিরাপরাধ। শীর্ষ সন্ত্রাসী উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি নাশকতার ৮ মামলার আসামি শাসছুল হক বুলবুলের বাবা জয়নগর ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক সহ-সভাপতি একাধিক নাশকতা মামলার আসামী গাজনা গ্রামের মৃত আছির আহম্মদের ছেলে মাওলানা আতাউর রহমানও এলাকায় বেড়াচ্ছে অজ্ঞাত কারণে খোশ মেজাজে। ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের হোচেন মড়লের ছেলে এশারত আলি, ফটিক গাজির ছেলে গফ্ফার গাজি, তমেজ মোড়লের ছেলে বিদার মোড়ল, ওজিয়ার মোড়লের ছেলে মুকুল মোড়ল, মৃত বাবরালি গাজির ছেলে শামছুর রহমান গাজী, মৃত বাবরালি সানার ছেলে মুনছুর রহমান, মৃত আনছার মোড়লের ছেলে বাবলু মোড়ল, খোর্দ্দবাঁটরা গ্রামের মৃত গফুর মালির ছেলে জয়নগর ইউনিয়ন জামাতের সাবেক আমির ও উপজেলা জামাতের সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তফা গাউসুল হক, মৃত নোবালি শেখের চেলে আরশাদ শেখ, যুবরাজের ছেলে মাষ্টার সিরাজুল ইসলাম, মানিকনগর গ্রামের ইউনিয়ন জামাতের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মৃত বাবরালি সানার ছেলে নাসির সানা, মানিকনগর ওয়ার্ড জামাতের সাংগঠনিক সম্পাদক ওই গ্রামের শাহাবুদ্দিন খঁ’ার ছেলে মোমিন খাঁ, রুহুল আমিন দফাদারের ছেলে আহসান হাবিব, ওয়ার্ড জামাতের সভাপতি মৃত ছহমান গাজির ছেলে আনোয়ার গাজি, নীলকণ্ঠপুর গ্রামের মৃত দায়েম মোল্যার ছেলে হজরত মোল্যা, মৃত ছবেদ আলির ছেলে মান্নান ডাক্তার, বসন্তপুর গ্রামের মৃত আতের আলি গাজির ছেলে নুরালী গাজি, আব্দুল গফ্ফার পিয়নসহ অনেকেই এখন বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এলাকায়। সুযোগ বুঝে ওরা এলাকায় গোপন মিটিং করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।